Monday, September 13, 2010

।। ডোর।।


there's a bluebird in my heart that wants to get out
but I'm too clever, I only let him out at night sometimes
when everybody's asleep.
I say, I know that you're there, so don't be sad.
and we sleep together like that with our secret pact
and it's nice enough to make a man weep,
but I don't weep,
do you?

রিনি চলে যাবার পর সে আঁকিবুকি আঁকে কাগজে।
কলম চড়ে বেড়ায় ইতঃস্তত,উদ্দেশ্যহীন-তার মতোই। ক'টা দাগ আঁকা হয় যেমন খুশী।না কোন শব্দ, না কোন বাক্য- না কোন প্রয়োজন। কাগজ দলা পাকায়, দলা পাকানো কাগজ শুয়ে থাকে নিরীহ আয়োজনে।
নতুন কাগজ শরীর মেলে। এবার কিছু শব্দ, একটি বাক্য-আয়োজনহীন, লেখা হয়। 'কোন সভ্যতাই মুছে দিতে পারেনি মানুষের বিষন্নতা'
কথাটা তার নিজের নয়। মগজের গলি-ঘুপচিতে আটকে থাকা অগুনতি বানানো কথার একটি। কে বলেছিলো যেনো?
মনে পড়ে- ইউজেন ইউনেস্কো। টেকো মাথার ফরাসী লোকটা শৈশবে ঘৃনা করতো থিয়েটার। পাঁরির রাস্তায় পুতুল নাচ দেখে বড় হতে হতে কি করে সে হয়ে গেলো নাটুকে মানুষ?
সেদিন রিনি ছিলো পাশে। বিয়ারের বুদ্বুদ ছিলো। টিভি জুড়ে ছিলো চ্যানেলের অদল বদল। বদলাতে বদলাতে একটা বাংলা সিনেমা। স্টিল আলমিরার মতো চ্যাপ্টা একটা হোঁদল, চর্বি ও মেদসর্বস্ব কুৎকুৎএর উদ্দেশ্যে চিৎকার করছে- 'আমি তোমাকে ঘৃণা করি কারন ঘৃণা করতে ভালোবাসা লাগে। আমি তোমাকে ভালোবাসিইইইইই...'

সে হেসে উঠেছিলো হাহাহা। 'ঘৃনা করতে নাকি ভালোবাসা লাগে'-হো হো... ছলকে উঠেছিল বিয়ার। চমকে উঠেছিল রিনি।
-এমন করে হাসে কেউ? তুমি আমাকে চমকে দিয়েছো।
-কমল এমন করে হাসেনা রিনি? তুমি চমকাও না আর?
-ধুর! ও এখন একটা ফার্নিচারের মতো। বোধহীন, প্রেমহীন।
-অথচ তুমি একসময় মরে গিয়েছিলে অজান্তে। বালিকা জানতোনা সে মরে গেছে।
-বোকা ছিলাম রে। অনেক বোকা।
-এখন অনেক চালাক হয়েছো রিনি? চালাকীতে কবিতা হয়না। তোমাকে দিয়ে কবিতা হবেনা বরং ফিরে যাও বাহারী ফার্নিচারের কাছে।

রিনি ফিরে গিয়েছিলো, রিনি ফিরে এসেছিলো। রিনি ফিরে যায়, রিনি ফিরে আসে। ফিরে এসে বারবার নত হয়, প্রার্থনার মতো নরোম অথচ লালসা'র পূর্নতায় ফিসফিস করে- 'আমাকে কবিতা দাও তুমি'
- আমি তো কবিতা লিখিনা রিনি, লিখিনি কোনদিন।
রিনি তবু নাছোড়- 'আমি জানি, তুমিই কবিতা। বোধহীন, প্রেমহীন আসবাব আমার ভাল্লাগেনা, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। আমাকে কবিতা দাও, প্রান দাও তুমি-আমাকে স্পর্শ করো'
মেয়েটাকে তার কাছে সিনেমার সেই কুৎকুৎএর মতো লাগে। দেয়ালের আবছায়ায় নিজের মুখ খুঁজতে খুঁজতে সে বলে-
'তোমার স্পর্শে এখন আর পরিত্রান নেই রিনি, বরং তুমি এবার গদ্য লিখো। যুক্তিতে কবিতা হয়না, হিসেবে কবিতা মরে যায়। তোমাকে অভিমন্যুর গল্প বলি বরং। অভি আমার বন্ধু, এই শহরে সে শরীর বিক্রি করে'
রিনিকে সে অভির গল্প বলে যায়। এই ঝলকদেয়া শহরের চকচক প্রাসাদগুলোতে বিত্তবন্দী নারীরা বড় ক্ষুধার্ত। আসবাবের মতো বোধহীন,প্রেমহীন পুরুষেরা আর জলার্দ্র করতে পারেনা তাদের নারীদের । অভিকে ডেকে নেয় সেই সব অতৃপ্ত অথচ ক্রয়ক্ষম নারীগন।
রিনি'র কেমন ঘোর লাগে অভির গল্পে। রিনি ছলকে উঠে
-অনেক মজা তো ওর
-অনেক মজা, অনেক বিষন্নতা। অভিমন্যু একদিন ওর কান্নার গল্প বলেছিলো। কেঁদেছিলো-প্রথম যেদিন সত্য জেনে গিয়েছিলো, প্রেম ছাড়া ও শরীরের আনন্দ সবটুকুই পাওয়া যায়!
রিনির ভেজা হাত তার আঙ্গুল স্পর্শ করে।
- তুমি বুঝি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অভিমন্যু'কেই দেখো?
আঙ্গুলের আর্দ্রতা সে অস্বীকার করে মুহুর্তে
-তোমার রক্তে এবার সন্দেহ রিনি। সন্দেহে কবিতা হয়না মেয়ে। কমল, আমি, অভিমন্যু-আমরা তিনজন পরস্পর নিয়তির মতো গেঁথে গিয়ে একটা বৃত্ত এঁকেছি।বৃত্তের প্রতিটি রেখায় কবিতা ও বিষন্নতা।
তুমি সেই বৃত্তের অংশ হবে রিনি?

রিনি চলে যায়। রিনি ফিরে আসে...

1 comment:

সাজ্জাদ রহমান said...

ভাল লিখেছেন।